মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেতন নিতে নারাজ এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী

প্রকাশিত: ৬:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২০
মোঃকাঞ্চন হোসেন মাদারীপুর।।
সম্প্রতি সরকার এমপিওভুক্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। মোবাইল ব্যাংকিং এ বেতন প্রদানের বিরোধীতা করে সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন শিক্ষকরা। আবার অনেক শিক্ষক ফেইজবুকে এভাবে বেতন প্রদানের বিরোধীতা করে কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছেন।

শিক্ষকরা দাবী করছেন, সকল সরকারি চাকুরীজীবীদের মতো চলমান ব্যাংকিং প্রথায় মাসের ১ তারিখ বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা। অনেক শিক্ষক মনে করছেন, এভাবে বেতন পাওয়ার বিষয়টি তাদের জন্য অপমানের।

জানা গেছে, শিক্ষকদের বেতন দ্রুত, সহজ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার ঝামেলা এড়াতেপ্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এর মাধ্যমে প্রদানের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।প্রথমে শিক্ষকদের অ্যাকাউন্ট খোলে সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করে সরাসরি ওই মোবাইল অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনের টাকা পাওয়ার বিষয়টি আরো দ্রুত ও সহজ করার পরিকল্পনা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে বেতন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।’

প্রসঙ্গত, এমপিওভুক্ত এসব শিক্ষকের বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থ মন্ত্রণালয় চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকে বেতনের টাকা ছাড় করে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকগুলো টাকা ছাড়করণে গড়িমসি করে। এ জন্য শিক্ষকদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা তাৎক্ষণিক বেতনের টাকা পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নির্দেশনা দিতে পারে। সবার অ্যাকাউন্ট খোলা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষকদের একটি তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। অর্থ মন্ত্রণালয় তালিকায় থাকা নাম, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভার, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সার্ভারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে। সব মিলে গেলে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

সূত্র মতে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রশিক্ষণ, অন খরচসহ এমপিওভুক্ত খাতে বরাদ্দ আছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। শুধু এমপিওভুক্তিতে বরাদ্দ প্রায় ১১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর পুরোটাই পাঠানো হবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। এ জন্য ১০০ টাকা পাঠাতে সরকারের খরচ হবে ৭০-৮০ পয়সা। সে হিসাবে সব মিলিয়ে সরকারের খরচ পড়বে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনায় সংগতি আনতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু শিক্ষকরা চলমান ব্যাংকিং সিস্টেমে প্রতিমাসের ১/২ তারিখের মধ্যে বেতন প্রদানের দাবী জানিয়ে বলছেন, যদি অন্যান্য চাকরিজীবীরা সবাই বেতন নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাংকের মাধ্যমেই পেতে পারেন তাহলে শিক্ষকদের বেতন প্রদান কেন মোবাইলে। শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, এতে তাদের ছোট করা হবে।



Categories