
এ.কে.এম সেলিম, রায়পুরা, নরসিংদীঃ
নরসিংদীর রায়পুরায় সাবেক প্রেমিকাকে পুরনো সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গহনা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় প্রেমিকের বাড়িতে হামলায় উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। ।
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের বড়কান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।এতে আহত হন ছেলের বাবা ডা.মো. শফিকুল ইসলাম(৬০), ছেলে রানা (২২), রাজু (১৮), মেয়ে রিমা (২০), রুমা (২১)। মেয়ে পক্ষের মেয়ের বাবা মো. বাদল মিয়া (৪০) এবং চাচা মো. মাসুম(৩০)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদরশী ছেলে ও মেয়ে দুজনেরই ফুপাতো ভাই সাগর রহমান শাওন বলেন, বাদল মিয়ার মেয়ে শান্তার সাথে রানার সম্পর্ক ছিল। শান্তার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর রানা শান্তাকে ভয় দেখিয়ে তার সকল গহনা হাতিয়ে নেয়।এরই জেরে এ ঘটনা ঘটে। শান্তা জানায়, বিয়ের আগে রানার সাথে তার সম্পর্ক ছিল।তখনকার কিছু ছবি রানা তার শশুর বাড়িতে পাঠিয়ে সংসার ভেঙ্গে দিবে বলে হুমকি দিয়ে তার সাথে ফোনে কথা বলতে বাধ্য করে। গত শনিবার রাতে ভয় দেখিয়ে তার সকল গহনা (৩ ভরি) রানাকে দিয়ে দিতে বলে। স্বামীর সংসার বাঁচাতে রানার কথামত সে তার গহনা রাতের আধাঁরে রানার হতে তুলে দেয়। পরদিন পরিবারের চাপে শান্তা সবকিছু বলে দেয়।সবকিছু যখন জানাজানি হয়ে গেছে এখন সে তার গহনা ফেরৎ চেয়ে রানার শাস্তি দাবী করেন।
শান্তার বাবা মে. বাদল মিয়া বলেন, শফিকুল ইসলামের বাড়ির সামনে নিজ জমিতে কাজ করতে গেলে শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলেরা হামলা করেন। হামলায় তার মাথায় জখম হয় ও তার ছোট ভাই মাসুম (৩০) মিয়ার মাথা ও কানে গুরুতর আঘাত পায়।দুজনেই রায়পুরা সদর হাসপাতলে চিকিৎসা নেন।বর্তমানেে তারা দুজনেই জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে শান্তার গহনা ও ভয় দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন ডা. শফিকুল ইসলামের ছেলে রানা। রানার বোন রিমা জানান, বাদল মিয়ার মেয়ে শান্তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার ভাই রানার। বছর খানেক আগে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যায় শান্তার। কিন্তু দুজনেরই ফোনে যোগাযোগ ছিল। গত শনিবার বাদল মিয়ার বাড়ি হতে গহনাদি চুরি হয়। এ ঘটনায় বাদল মিয়ার পরিবার রানাকে সন্দেহ করে ২/৩ দিন তাদের বাড়িতে রানাকে ধরতে এসে বাঁধার মুখে ফিরে যায়।কিন্তু গতকাল বুধবার আচমকা বাদল মিয়া, ধন মিয়া, খোকা মিয়া, রোকন,শাওন, মাসুম ও আবির মিলে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় ডা. মো. শফিকুল ইসলামকে খাবার টেবিল থেকে ধরে নিয়ে মারধর করে।লাঠির আঘাতে শফিকুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়।বাঁধা দিতে আসলে শফিকুলের ছেলে রানার হাতে দা দিয়ে জখন করে এবং রানার দুই বোন রুমা,রিমা ও ছোট ভাই রাজুকে মারধর করে আহত করে।এসময় রুমার গলার চেইন ও নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানান রানার বোন রুমা।আহত শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে রানা রায়পুরা সদর হাসতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এখন নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম মিঠু ঝগড়ার ঘটনা নিশ্চিত করেন। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
রায়পুরা থানার এসআই দেব দুলাল বলেন, গত ১৭ তারিখ বাড়িতে হামলা হওয়ার আশংকায় ডা. শফিকুল ইসলাম থানায় আসলে পুলিশ গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার কথা বলে নিজেদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের কথা বলে আসেন। এরই মধ্যে গতকাল বিকেলে মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ মামলা দায়ের করেননি।