“সাউদ্যাম্পটনে ইংল্যান্ডের ৩২৮ রানের পাহাড় আয়ারল্যান্ড টপকে গেছে ১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই”

সাউদ্যাম্পটনে শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩২৮ রানের পাহাড় আয়ারল্যান্ড টপকে গেছে ১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ইংল্যান্ডের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য লড়াই করেই হারে আইরিশরা। মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় তথা “শেষ ম্যাচে” রূপকথার এক জয় তুলে নিল সফরকারীরা। সাউদ্যাম্পটনে ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩২৮ রানের পাহাড় আয়ারল্যান্ড টপকে গেছে এক বল ও সাত উইকেট হাতে রেখেই।
আয়ারল্যান্ড এই জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল। সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরে শেষ করল তারা। তবে ঐতিহাসিক জয়ে সিরিজ হারের ব্যাপারটা আড়ালে চলে গেছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এদিন নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল আয়ারল্যান্ড। তাদের আগের রেকর্ডটাও ছিল এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। ঘরের মাঠে এরচেয়ে বেশি রান করে কখনো হারেনি ইংলিশরা।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। বল হাতে শুরুতেই ইংল্যান্ডকে চেপে ধরে তারা। ৪৩ রানের মধ্যে তিন উইকেট তুলে নেয় অতিথিরা। পরে স্বাগতিকদের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান ও টম ব্যান্টন। ৮৪ বলে ১০৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে পথ দেখান মরগান। ইনিংসে ১৫টি চার ও চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
ব্যান্টন আউট হন ৫১ বলে ৫৮ রান করে। মিডল অর্ডারে এই দুজনের বিদায়ের পর ইংল্যান্ডের ইনিংস মেরামত করতে আসেন নিচের সারির দুই ব্যাটসম্যান ডেভিড উইলি ও টম কারান। দ্বিতীয়জনকে আউট করা যায়নি। ৩৮ রানে অজেয় থাকেন তিনি। তবে ৪২ বলের ঝড়ো ইনিংসে ইংলিশদের দলীয় শতক তিন শ পার করেন উইলি।
৫১ রানের ইনিংসটি তিনি সাজান তিনটি করে চার-ছক্কায়। শেষ অবধি ইনিংসের এক বল বাকি থাকতেই ইংল্যান্ডকে থামায় আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নিয়েছেন ক্রেইগ ইয়ং। দুটি করে শিকার জসুয়া লিটল ও কার্টিস ক্যামফারের। বোলাররা লক্ষ্যটা নাগালে রাখতে পারেনি। তবে ৩২৯ রানের হিমালয়তুল্য লক্ষ্য দেখেও ভড়কে যায়নি আয়ারল্যান্ড।
নবম ওভারে বিনা উইকেটে ৫০ রান করে অতিথিরা। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন উইলি; ১২ রানে বিদায় করেন ওপেনার গ্যারেথ ডেলানিকে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই অসাধ্য সাধনের ভিত গড়ে আয়ারল্যান্ড। ওপেনার পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি গড়ে তোলেন ২১৪ রানের জুটি। দুজনই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করেন।
ব্যক্তিগত শতকও তুলে নেন তারা। দলকে জয়ের পথে রেখেই বিদায় নেন দুজন। তাদের জুটি ভাঙে দুর্ভাগ্যবশত রান আউটে। কাঁটা পড়েন স্টার্লিং। ১২৮ বলে ১৪২ রানের ম্যাচজয়ী ইংনিস খেলেন তিনি। ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও ছয়টি ছক্কার মার। তার সঙ্গী বালবার্নি ১১২ বলে ১১৩ রানে আউট হন। ইনিংসে চার মেরেছেন ১২টি।
৪৫তম ওভারের মাঝপথে ২৭৯ রানে দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন বালবার্নি। পরে হ্যারি হেক্টর ও কেভিন ও ব্রেইনের ব্যাটে দুর্দান্ত সমাপ্তি টানে আয়ারল্যান্ড। এ সময় ম্যাচ ছড়িয়েছে উত্তেজনার রেণু। শেষ কয়েক ওভারে কখনো ইংল্যান্ড কখনো বা আয়ারল্যান্ডের দিকে ম্যাচ হেলে পড়ে। নখকামড়ানো উত্তেজনা শেষ হয়েছে ম্যাচের এক বল বাকি থাকতে।
শেষ পাঁচ ওভারে ৪৪ রানের কঠিন সমীকরণ দাঁড়ায় আয়ারল্যান্ডের সামনে। শেষ ওভারে যা নেমে আসে আট রানে। যা মিলিয়ে ফেলেন হেক্টর এবং কেভিন। প্রথমজন ২৬ বলে ২৯ এবং দ্বিতীয়জন ১৫ বলে ২১ রানে অজেয় থাকেন। এই দুজন মনে করিয়ে দিলেন ব্যাঙ্গালুরুর সেই লড়াইয়ের কথা। সেদিনও ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩২৮ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আইরিশরা। কাল রাতে নিজেদের ইতিহাসই নতুন করে লিখল আয়ারল্যান্ড।