
প্রদীপ কুমার সাহা, জেলা প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ।
আধুনিক বিশ্বে শিক্ষা একটি স্বীকৃত বিষয়। এটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের পরিকল্পিত প্রক্রিয়া। শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ভর করে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মতাদর্শের উপর। শিক্ষার উদ্দেশ্য কী হবে? অর্থ উপার্জন না ব্যক্তি চরিত্রের বিকাশ? শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যক্তি চেতনা ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় চেতনায় রূপান্তর করা। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও মতাদর্শের কারণে শিক্ষার অর্থ এবং সজ্ঞায় থাকছে নানা রকমের বৈচিত্র্য। চলমান এই বিতর্কের অবসান সহজে সম্ভব না হলেও সর্বজন স্বীকৃত ব্যাপার হচ্ছে, শিক্ষা এবং উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক।
শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। সৃষ্টির শুরুতে স্রষ্টার এ শিক্ষাদান এবং মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে আমাদের দেশের অনেক নাগরিক বঞ্চিত রয়েছে। এর মূলে রয়েছে বৈষম্য। বৈষম্যের ভিত্তি বহুবিধ হলেও অর্থনৈতিক বৈষম্যই সাম্যের পথে অন্তরায়। শিক্ষায় চলমান এই বৈষম্যের অবসান না হলে মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করা যাবে না।
দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হলে শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে থাকে। শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধ কিউবা অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্রমাগত এগিয়ে চলছে। শিক্ষায় সর্বোচ্চ বিনিয়োগের মাধ্যমে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, সিংগাপুর, তাইওয়ান অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতার ফলেই চীন তার বিশাল জনগোষ্ঠীকে সম্পদে রূপান্তর করে শিল্পায়নে ইউরোপ, আমেরিকার সাথে সমতালে এগিয়ে চলছে। শিক্ষায় পরিকল্পিত বিনিয়োগ একটি জাতির জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে পারে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের এশিয়ার দেশ জাপান। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডের মত দেশগুলো বাংলাদেশের অবস্থানে থাকার সময় শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ শিক্ষা বিষয়ক সংগঠন Education for all (EFA) এর নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্বের প্রতিটি দেশকে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার কথা, নিজ দেশের দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ বা জাতীয় আয়ের ২০ শতাংশ । কিন্তু হতাশার বিষয় বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ২.১ শতাংশ। জিডিপির অনুপাতে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের ব্যয় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। এমনকি সার্কভূক্ত আমাদের প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপের চেয়েও কম।
শিক্ষায় বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তি, সমাজ ও রাস্ট্র লাভবান হয়। মোট কথা শিক্ষা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচনের সর্বাপেক্ষা শক্ষিশালী উপকরণ ও হাতিয়ার। বীর বাঙ্গালী লড়াকু জাতি। লড়াই করেই বাঙ্গালী তার জাতিসত্বা টিকিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সহ নানাবিধ উৎপাদনের উপকরণের অপ্রতুলতা থাকলেও আমাদের রয়েছে মানব সম্পদের প্রাচুর্য। মানব সম্পদ হচ্ছে একটি জাতির প্রকৃত সম্পদ। এ সম্পদ ব্যবহার করেই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে অগ্রসর হতে হবে। আর মানব সম্পদ ব্যবহারের সাথে সম্পর্ক উপযুক্ত শিক্ষার। শিক্ষায় সঠিক বিনিয়োগই নিশ্চিত করতে পারে টেকসই উন্নয়নের স্বপ্ন।
বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের বিশাল আকার দেশের প্রবৃদ্ধির প্রমাণ বহন করে। বাজেটের আকার যত বড়ই হোক না কেন, আসল খাত অর্থাৎ শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ হতাশাব্যাঞ্জক। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকার ও নীতি নির্ধারকদের বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা ও নীতির অভাবে দেশের অর্থনীতি যেমন ব্যহত হচ্ছে, একই সাথে শিক্ষাখাতে বৈষম্য থাকায় সমাজে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাই আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে, শিক্ষায় গুণগতমান পরিবর্তনে গুরুত্ব দেয়া উচিত। বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিৎকরণে চাই মানসম্মত মেধাবী শিক্ষক। মানসম্মত শিক্ষক পাবার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত কারিকুলাম, ব্যাপক গবেষণা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিখন শেখানো পদ্ধতির পরিবর্তন। সেইসাথে প্রয়োজন শিক্ষকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ । আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম ত্রটি বহুধাবিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা। বহুধাবিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় শিক্ষা ব্যবস্থায় চলছে এক নৈরাজ্যকর বিশৃ্ঙ্খল অব্যবস্থা। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলছে দুইরকমের শিক্ষা ব্যবস্থা। কেউ খাবেতো কেই খাবে না , তা হবে না। গণতন্ত্রের এই রীতিনীতি শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে অবহেলিত রয়েছে।
দেশে প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলামের অন্তর্ভূক্ত পাঠ্যসূচীর পাঠদান সমযোগ্যতা সম্পন্ন সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষকদের দ্বারা বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারী নিয়মে বেতন, বাড়িভাড়া, উৎসবভাতা, মেডিকেল ভাতা সহ আনুষাঙ্গিক সকল ভাতা পেলেও বেসরকারী শিক্ষকদের পরিশ্রমের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক দেয়া হয় না। তাঁদের দেয়া হয় মাসিক খয়রাতি অনুদান। ১৯৮০ সালে বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। তখন তাঁদের দেয়া হতো মূল বেতনের ৫০ শতাংশ। দীর্ঘ ২৬ বছর আন্দোলন সংগ্রামের পর ২০০৬ সাল হতে তাঁদেরকে জাতীয় বেতন স্কেলের শতভাগ অনুদান দেয়া হয়। বেসরকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে আগে কোন উৎসব ভাতার প্রচলন ছিল না। ২০০৪ সাল থেকে সিকি পরিমান (২৫ শতাংশ) উৎসব ভাতার প্রচলন হয়েছে। দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে, উৎসব ভাতার পরিমান আজও অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৫% হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারী হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বেসরকারি শিক্ষকদের তা থেকে বঞ্চিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, নতুন প্রজন্মের শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের আন্দোলন সংগ্রামের ফলে ২০১৮ সাল থেকে (বকেয়া ছাড়া) বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতার অনুদান দেয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি শিক্ষকদের বঞ্চনার কথা অবগত নয় অথবা তাঁরা জেগে থেকে ঘুমানোর অভিনয় করছেন।
পত্রিকায় পাতায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) তাকালেই দেখা যায় বেসরকারি শিক্ষকদের নানা হয়রানি, বৈষম্য আর বঞ্চনার কথা। পাহাড়সম বৈষম্য বজায় থাকায় নতুন প্রজন্মের মেধাবীরা এ মহান পেশায় আসছে না, আসলেও টিকে থাকছে না। গ্রামাঞ্চলে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষকের সংকট কাটছে না, কাটানোর কার্যকর কোন পদক্ষেপ ও নেই। তাই দেশের শিক্ষাবিদ সহ সুশীল সমাজের নেতৃবন্দকে সমস্যা থেকে উত্তোরনের উপায় খুঁজে বের করা উচিত। শিক্ষাবান্ধব গণতান্ত্রিক সরকারকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রনীত সুপারিশমালা দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
দেশের সাধারণ জনগণ মনে করে, উপরিউক্ত সকল সমস্যার সমাধান শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমেই সম্ভব। শিক্ষা জাতীকরণ হলে গুনগত শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে, শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। সুযোগ্য শিক্ষকদের পাঠদানের মাধ্যমে উপযুক্ত নতুন প্রজন্ম তৈরি হবে, নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারের সন্তানরা অল্প খরচে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ পাবে। জাতীয়করণের মাধ্যমেই লক্ষ পরিবার ও কোটি জনতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। জাতীয়করনেই রয়েছে শিক্ষকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক মর্যাদার প্রতিশ্রুতি। জাতীয়করণ মানেই বেতন ভাতার শতভাগ নিশ্চয়তা। সেখানে অস্তিত্ব সংকটের কোন কারন নেই। নেই কোন প্রতিযোগিতা। মাধ্যমিক এবং কলেজ পর্যায়ের বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠন বদলী প্রথা চালুসহ বিচ্ছিন্ন কিছু দাবীতে সোচ্চার রয়েছেন। আমার কথা, আলাদা আলাদা দাবী উত্থাপনের কোন প্রয়োজন নেই। একমাত্র জাতীয়করণের মধ্যেই রয়েছে সকল সমস্যার সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান।
দেশের আম জনতার দৃঢ় বিশ্বাস শিক্ষা যে কোন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাত। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণে বিনিয়োগ বাড়ালে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে উন্নত দেশের তালিকায় উঠে আসবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ বিমানের মতো অনেক রাষ্টায়ত্ব প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। যে দেশের সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা অভিজাত ধনিক শ্রেনীর কাছে অলস মানি হিসেবে পড়ে আছে, যে দেশের সরকার নিজ অর্থায়নে বিশাল মেগা প্রকল্পের প্রজেক্ট পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করছে, সে দেশের শিক্ষাবান্ধব গনতান্ত্রিক সরকার অর্থনৈতিক সমস্যার অজুহাতে নিশ্চই আমজনতার দাবী অগ্রাহ্য করবে না বা করা উচিত হবে না। এজন্য শিক্ষাবান্ধব সরকারকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে অনায়াসে বাস্তবায়নযোগ্য উপায় উদ্ভাবন করতে হবে।
স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩৬ হাজার ১৬৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। ২০১৩ সালে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যায়ক্রমে আরো ২৬ হাজার ১৯৩টি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১লাখ ৩ হাজার ৮৪৫জন শিক্ষককে জাতীয়করণের আওতায় আনেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের বেদনাদায়ক অধ্যায় সৃষ্টি না হলে বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ক্ষেত্রে ও একই সিদ্ধান্ত নিতেন বলে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল বা কলেজ নেই সেসব উপজেলায় অন্তত ১টি করে স্কুল ও কলেজকে সরকারিকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু এতে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য কমছে না, বরং এতে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ সেরা স্কুল বা কলেজের কোন মানদন্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে প্রকাশ করা হয়নি। উপজেলা সদরে অবস্থিত সুপ্রতিষ্ঠিত স্কুল কলেজ বাদ দিয়ে নব্য প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়েছে। এতে দেশের শিক্ষাঙ্গনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। দিন দিন বৈষম্যের ব্যবধান আরো বাড়ছে। দেশের জনগণের দাবী খেয়াল খুশিমত গুটিকয়েক স্কুল কলেজ জাতীকরণ না করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই জাতীয়করণ করা হোক। এতে জনগণ যেমন আশার আলো দেখতে পাবেন, তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থায় ও বৈষম্যের অবসান হবে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষায় সাফল্য অর্জন করতে যেভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে, তদ্রপ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় শতভাগ সফলতা প্রাপ্তিতে প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ। দেশের বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠন বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখাতে চেষ্টা করছেন যে, সরকার যদি পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করেন তবে সরকারের অর্থের অপচয় নয়, বরং সাশ্রয় হবে। শিক্ষাবান্ধব সরকার এ প্রস্তাবের সত্যতা যাচাই পূর্বক জাতীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ করলে শিক্ষাক্ষেত্রে সকল বিভেদ, বৈষম্য হতাশা, বঞ্চনার অবসান ঘটবে।
গণতান্ত্রিক সরকার যদি মনে করে দেশের আপামর জনগনের স্বার্থে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ প্রয়োজন তবে তা মোটেও কষ্টসাধ্য কোন কাজ নয়। দরকার শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছার। যত দ্রুত সম্ভব জাতীকরণ সম্পন্ন হবে তত দ্রুতই অবসান ঘটবে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য আর বিভেদের। টেকসই মানসম্মত ও বৈষম্যহীন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ হলে কৃতিত্ব অর্জন করবে সরকার। পেশায় নিশ্চয়তা পাবে শিক্ষক আর সুফল ভোগ করবে দেশের সর্বস্তরের জনগন। শিক্ষায় বিদ্যমান বৈষম্য দুর হোক, জাতীয়করনের ছোঁয়ায় জেগে উঠুক দক্ষ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্ম। এই প্রত্যাশায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক সংগঠনগুলোকে সকল বিভেদ ভুলে একতাবদ্ধ হয়ে জাতীয়করণে অগ্রনী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
কবিতার ছন্দে বলতে ইচ্ছে করছে,
“মুজিব বর্ষের ক্ষনগননায়
জাতির পিতাকে করছি স্মরণ
শ্রদ্ধাভরে শপথ করে
বর্ষটি মোরা করবো বরণ
মানবতার মা শেখ হাসিনা
করবে শিক্ষা জাতীয়করণ”।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক
শ্রীনগর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ
শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ।
যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক
বাবেশিকফো কেন্দ্রীয় কমিটি