“মেজর সিনহা হত্যা কান্ড: সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানবন্ধনে পুলিশের হামলা”

প্রকাশিত: ৫:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২০

বরগুনা থেকে জহিরুল হক।

মেজর সিনহা হত্যা কান্ড: সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানবন্ধনে পুলিশের হামলা।

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের পর বরগুনা জেলার বামনা উপজেলা সন্তান গ্রেফতার শাহেদুল ইসলাম সিফাতের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে হামলা করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সিফাতের নিজ এলাকা বামনায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে বামনায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন সিফাতের সহপাঠীরা। বামনার কলেজ রোড সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে চলা মানববন্ধনে হঠাৎ পুলিশের একটি টিম এসে ব্যানার-ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল।

পরে বামনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের গালিগালাজ করে পুলিশকে লাঠিচার্জের নির্দেশ দেন। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে মুহূর্তেই মানববন্ধন পণ্ড করে দেয়। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেও লাঠিচার্জ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সিফাতের নানা মোঃ আইউব আলী হাওলাদার সহ ১০/১৫ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে সিফাতের নানা মো. আইউব আলী হাওলাদার বলেন, পুলিশ আজ যা করেছে তা মোটেও ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে বামনা থানা পুলিশর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমাদের অনুমতি না নিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য একদল দুষ্কৃতকারীরা মানববন্ধন করছে বলে আমি জানতে পারি।
সিফাতের স্বজন, হামলার স্বীকার হওয়া রুবেল ও স্থানীয়রা জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই মানবন্ধন করেছি। এতে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সুযোগ নেই।

তারা আরও বলেন এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সিফাত বড়। সিফাতের একমাত্র বোন অনন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ১০ বছর আগে বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর সিফাতের মা শিরীন আক্তার শিলা ৯ বছর ধরে লন্ডন প্রবাসী। আরা বাবা মো. মোস্তফা থাকেন ঢাকায়।

সিফাতের শৈশব ও কৈশর কেটেছে বরগুনার বামনা উপজেলার পশ্চিম সফিপুর গ্রামের নানা বাড়িতে। বামনার সরকারি সারওয়ার জান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সিফাত। এরপর বামনা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে।
ঢাকায় ভর্তি হওয়ার পর খালার বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন সিফাত। বছরে দু-চারবার বামনা আসলেও পড়ে থাকতেন ক্যামেরা আর ট্রাইপড নিয়ে। ছবি তোলার নেশায় ঘুরে বেড়াতেন এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। শৈশবে বাবা-মায়ের স্নেহ বঞ্চিত হলেও কখনও সিফাত বিপথগামী হননি বলে জানান তারা।

জহিরুল হক
বরগুনা জেলা প্রতিনিধি
০১৭৬৪৪৪০৪৪৪
০৮/০৮/২০২০


Categories