
“বিসিএস পরীক্ষা, ক্যাডার নির্বাচন ও বি সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদের সমসাময়িক প্রবণতা নিয়ে লিখেছেন —
জনাব অাবদুল খালেক
সহকারী অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ।
(উনার ফেইসবুক টাইম লাইন থেকে সংগৃহীত)
গত একযুগের ও বেশি সময় যাবৎ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ( পি এস সি) কোনো বিতর্ক ছাড়াই অত্যন্ত সফলভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আসছে। ফলে পাবলিক সার্ভিসে দেশের সকল শ্রেণির মেধাবীদের প্রবেশ ঘটছে যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। এরই ধারাবাহিকতায় ৩৮ তম বিসিএস এ ২২০৪ জন মেধাবী প্রতিযোগী বিভিন্ন ক্যাডারে যোগদানের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁদেরকে ক্যাডার সার্ভিসে স্বাগত জানাই।
ক্যাডার সার্ভিসের সব ক্যাডারের কাজের ধরন ও সুযোগ সুবিধা এক রকম নয়। ব্যপারটা এখন গ্রামের সাধারণ মানুষ ও জানে। এডমিন ও পুলিশ ক্যাডার রাস্ট্র্র পরিচালনার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত বিধায় রাস্ট্রের কাছে তাদের গুরুত্ব ও বেশি। তাদের কাজের ধরন ও কাজের পরিধি অন্যদের চেয়ে আলাদাও বটে।
ইদানিংকালে উপরোক্ত দুটো ক্যাডারের প্রতি চাকুরি প্রত্যাশি ও সমাজের সাধারণ মানুষের আগ্রহ মাত্রাতিরিক্ত বেশি। এর কয়েকটি কারণ নিম্নরুপ হতে পারে।
১। ক্ষমতা।
২। আর্থিক সুযোগ সুবিধা।
৩। কাজের পরিবেশ।
৪। চেইন অব কমান্ড।
৫। দেশ সেবার সুযোগ।
৬। দেশ পরিচালনায় প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহণের সুযোগ।
উপরের কারণগুলি ছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে যা ক্যাডার দুটোকে এতটাই আকর্ষণীয় করে তুলেছে যে বিভিন্ন পেশাজীবি সম্প্রদায় ( ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, কৃষিবিদ) তাদের নিজেদের পেশা ছেড়ে এ ক্যাডার দুটোতে ( ফরেন ক্যাডার সহ তিনটি) চলে আসছে। সর্বশেষ বিসিএস এর পরিসংখ্যান ও তাই বলছে।
মেধা তালিকার প্রথম ১০ জনের ৬ জনই ডাক্তার। এর কারণ খুব স্পষ্ট ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার গণ দেখলেন এত ক্ষমতা থাকতে আমরা কেন জনগণের মার খাব। সেবা দেয়ার পরেও কেন কসাই উপাধি পাব? তার চেয়ে বরং ক্ষমতাকে বেছে নেওয়া ভাল। আমাদের চেয়ে কম মেধাবীদের দ্বারা আমরা কেন পরচালিত হবো? একথা অনস্বীকার্য যে মেধার দিক থেকে তাদের সমান্তরাল দেশে খুব ছাত্রই আছে এবং এর প্রমাণ তারা গত কয়েকটি বিসিএস এ ভালভাবেই দিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্রদের জন্য চাকুরির ভবিষ্যত খুব ভাল হবে বলে মনে হয়না। অনেকেই তাদের জেনারেল ক্যাডারে আগমনকে ভালভাবে দেখছেন না। আমি ইতিবাচক মনে করছি কারণ তাতে দেশে মেধাবীরা সঠিক জায়গা পেল।
শিক্ষা ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে এ ক্যাডারের কিছু দিক তুলে ধরব। অনেকে মনে করেন শিক্ষা ক্যাডার মানে কলেজ শিক্ষক। তা ঠিক না। প্রত্যেক ক্যাডারের কিছু প্রশাসনিক দিক থাকে যা ক্যাডার সার্ভিসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিক্ষা ক্যাডার দ্বারা পরিচালিত দপ্তর সমুহ:
১। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
২। দেশের বিভিন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সমুহ।
৩। এনসিটিবি সহ আরো অনেক দপ্তর।
শিক্ষা ক্যাডারে কলেজে যোগদান করার আগে নিম্নের বিষয় সমুহে মানসিক ভাবে প্রস্থুতি নিনঃ
১। সততাঃ অসৎ হওয়ার সুযোগ কম।
২। উপরি আয়ঃ বেতন বাদে ডিউটি ও খাতা মুল্যায়ন ছাড়া অন্যকোনো বৈধ আয় নেই বললেই চলে।
৩। কোনো ক্ষমতা নেই। ক্ষমতার লোভ ছাড়তে হবে।
৪। মানসিক প্রশান্তি পাবেন নিজেকে জাতি গঠনে নিয়োজিত করে।
৫। ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
৬। জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
তাই সব ক্যাডারেরই ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে।দেশ গঠনে সবারই অবদান অনস্বীকার্য। সব ক্যাডারকেই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।