বরগুনা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জলিলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।

জহিরুল হক-বরগুনা জেলা প্রতিনিধি।
বরগুনা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জলিলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।
বরগুনা খাদ্যগুদামে দীর্ঘ বছরের কর্মরত শ্রমিকরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় কাজ হারানোর প্রতিবাদে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে বরগুনা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ সংবাদ সম্মেলন করে বরগুনা খাদ্যগুদাম শ্রমিক ইউনিয়ন লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুমন সিকদার সহ অন্যান্য শ্রমিকরা।
২০২০ সালের জুন মাসে বেতাগী খাদ্য গুদাম হতে পঁচা ও পোকে খাওয়া ১৭০ মেট্রিক টন চাল বরগুনা খাদ্যগুদামে আনা হলে শ্রমিকরা খাদ্যগুদামে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বললে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে সাংবাদিকরা হাতেনাতে ধরে ফেলে বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশ করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রমিকদের তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে ২০২০ সালের পহেলা জুলাই বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এর পরে ১৫ অক্টোবর এ সকল শ্রমিকদের খাদ্য গুদাম থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বিষয়টি জানিয়ে ২০২০সালের ১৮ অক্টোবর বরগুনা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলে জেলা প্রশাসক এর নির্দেশে শ্রমিকদের পুনরায় কাজে বহাল করা হয়। এর পরবর্তী এক বছর শ্রমিকরা ভালোভাবেই কাজ করছিল।
২০২১ সালে শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে আবারো সমস্যার সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালে গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন ২ হাজার ৮শ’ ৫০ মেট্রিক টন ধান গুদামজাত করেন। সেখানে ২৫০ টাকা দরে শ্রমিকদের পাওনা উত্তোলন করে শ্রমিকদের হাতে না দিয়ে তৎকালীন খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন পকেটেভরে নেয় এবং বরগুনা থেকে বদলি হয়ে যান।
বদলির সময় বর্তমান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল শিকদার শ্রমিকদের টাকা আল মামুনের কাছ থেকে বুঝে রেখেছেন এবং পরবর্তীতে তাদের দিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আঃ জলিল টাকা চাইতে গেলে শ্রমিকদের তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। তাছাড়া তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ডেলিভারি মূল্য ৩৩০ টাকার পরিবর্তে ১৮০ টাকা করে দেয়ায় শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে গত ২১ সালের ২১ নভেম্বর খাদ্যগুদামের পরিদর্শক আব্দুল জলিল শিকদার, টালি মাস্টার শফিকুল ইসলাম, লেবার সর্দার ফোরকান সহ ১২ থেকে ১৪ জন লোক মিলে খাদ্যগুদামের সামনে থেকে এই শ্রমিকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন।
শ্রমিকদের পক্ষে বরগুনা খাদ্যগুদাম শ্রমিক ইউনিয়ন লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুমন সিকদার স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দুর্নীতির বিষয়ে উঠে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে কাজ হারানো শ্রমিকরা তাদের স্ত্রী সন্তানদের মানবেতর জীবনযাপন থেকে উত্তরণ চেয়ে এবং কাজে যোগদান করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।