আবদুল মান্নান,কক্সবাজার।

মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রধান আসামি করে আরো দুই হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।টেকনাফের নূর মোহাম্মদ ও মোঃ আজিজ নামের দুই ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলাদ্বয় দায়ের করা হয়।

নিহত নুর মোহাম্মদ টেকনাফ সদরের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা এবং মোঃ আজিজ একই ইউনিয়নের ডেইল পাড়ার বাসিন্দা।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের  সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ – ৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই দুই মামলা দায়ের করেন নিহত নুর মোহাম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম ও মোঃ আজিজের মা হালিমা খাতুন।

বাদি পক্ষের আইনজীবি নূর হোসেন নাহিদ মোঃ মোস্তফা জানান, মামলার এজাহার দুটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য মামলা হয়েছিল  কিনা এবং নিহত দুজনের ময়না তদন্ত হয়েছিল কিনা  আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নিহত নূর মোহাম্মদের মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৯ মার্চ বীজ ও সার আনতে কৃষি অফিস গেলে সেখান থেকে কৃষি সরঞ্জাম ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তার পরিবারর থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি প্রদীপসহ অন্য সহযোগীরা।  অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ার দেওয়ারহুমকি দেয়া হয়।

তাই বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বিভিন্নভাবে যোগাড় করে পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হয়। ২১ মার্চ  নুর মোহাম্মদকে থানা থেকে বের করে মেরিন ড্রাইভ সড়কের রাজারছড়া এলাকায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে নুর মোহাম্মদকে কয়েকজন পুলিশ তুলি ঝাউবাগানে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

নিহত মোঃ আজিজের মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন যে, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর টেকনাফ থানার একদল পুলিশ মোঃ আজিজ, নুর হাসান ও আবুল খায়ের নামের তিনজনকে ধরে নিয়ে যায়। মোঃ আজিজের পরিবার থেকে ওসি প্রদীপ সহ অন্যান্যরা ২০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা নাদিলে ওসি প্রদীপ আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে আজিজের জীবন বাঁচাতে বিভিন্নভাবে ৫০ হাজার পুলিশের হাতে তুলে দেয় আজিজের পরিবার। পরিপূর্ণ দাবি পূরণ করতে না পারায় ১৯ অক্টোবর রাতে টেকনাফের  মহেশখালীয়াপাড়া নদীঘাট এলাকায় আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়।