প্রেক্ষিত শিক্ষানীতি ২০১০ ও এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বিদ্যমান বৈষম্য।

প্রকাশিত: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২০

 

মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে অবকাঠামোগত আয়োজনের পাশাপাশি সর্বাগ্রে চাই দক্ষ, যোগ্য, নিবেদিতপ্রাণ ও আদর্শবাদী শিক্ষক। আর শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীদের আকর্ষণ করতে হলে এই পেশার আর্থিক সুযোগ -সুবিধা ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে ;এটা সর্বজনস্বীকৃত। প্রস্তাবিত শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে —-অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং জাতির ভবিষ্যত গঠনে শিক্ষকদের গুরুত্ব ও মর্যাদা বিবেচনায় নিয়ে তাদের বেতন -ভাতা নির্ধারণ করা হবে, পাশাপাশি তাদের জবাদিহিতাও নিশ্চিত করা হবে। “(অধ্যায় -২, কৌশল-২৮,পৃষ্ঠা-০৮)।যে শিক্ষক জ্ঞানের আলো জ্বালাবেন, নৈতিকতার উন্মেষ ঘটাবেন তাদের যদি আর্থিক দূরাবস্থায় ও অধিকারহীন অসম্মানজনক জীবন -যাপন করতে হয়, তাহলে তাঁরাই বা আদর্শের প্রতীক হয়ে শিক্ষা দিবেন কিভাবে? মানুষ গড়ার কাজ সমাজের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তাই বিজ্ঞানী,গবেষক ও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ বেতন কাঠামোর আওতায় আনতে হবে এবং সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী,প্রধান বিচারপতির পরেই শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধার বিধান দরকার। কমিটি তার প্রস্তাবনায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১ গ্রেড উন্নীত করার প্রস্তাব করেছেন তা যথেষ্ট নয়। তাই আমরা ২০১০ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদে নিয়োগ বহাল চাই। আগে ৮ বছর হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক/উপাধ্যক্ষ  ও ১০ বছর হলে সরাসরি প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ  হতে পারতেন। সম্প্রতি ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী বয়স বৃদ্ধি করেছেন যা শিক্ষকদের পেশার স্বার্থের পরিপন্থী। কারণ ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্বের নীতিমালার চেয়ে কঠিন শর্তারোপের বেড়াজালে বন্দী করে দিয়েছেন। ।২০১৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী এমপিও ভূক্ত শিক্ষক -কর্মচারীদের সকল দিক থেকে শৃঙ্খলিত করা হয়েছে। এর মূল কারণ বাংলাদেশে বহুধা ধারায় বিভক্ত রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করা শিক্ষক সংগঠন। সমাজ পরিবর্তন ধারা যেমন গতিশীল  তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থাও পরিবর্তন হবে এটাই বাস্তব। কিন্তুু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও এখনো পর্যন্ত কোন শিক্ষক ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে রেখে কোন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন করতে পারেনি। শিক্ষানীতি প্রসঙ্গটি এ দেশে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত।এর ঐতিহাসিক পেক্ষাপট আছে। পরাধীন ব্রিটিশ -ভারতবর্ষ, তার সাথে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকদের ২৩ বছরের আমল স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৯ বছরে একই নীতির আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে। তাই ছাত্র -শিক্ষকদের দাবী পূরণ স্বাধীন বাংলাদেশেও সোনার হরিণের। ৩০ লক্ষ শহিদের লাশের পাহাড় পেরিয়ে আমরা বর্তমানে এসেছি, ২ লক্ষ মায়ের স্নেহের আচঁলের ছায়াতলে এই দেশ। তাই বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন, লাখো শহিদের প্রত্যাশা, বীর জননী ত্যাগের প্রতিদান এখনি সময়, শিক্ষায় সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত সহ,  বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে, মুজিব বর্ষে, স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ান্তীতে এমপিওভুক্ত  শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণা। আর এমনটাই প্রত্যাশা করছে প্রায় পাঁচ লক্ষ ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি কারণ বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন পূরণ এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ।


Categories