“নজির স্থাপন করলেন নিজের মেয়ের মতো করে গৃহকর্মী শারমিনের বিয়ে দিয়ে”

নজির স্থাপন করলেন নিজের মেয়ের মতো করে গৃহকর্মী শারমিনের বিয়ে দিয়ে।
মেয়ের আদরে জাঁকজমক পরিবেশে গৃহকর্মীর বিয়ে দিয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত / নজির স্থাপন করেছেন এক গৃহকর্ত্রী। করোনাকালেই গৃহকর্মী শারমিন আক্তারের বিয়ে দিয়েছেন রাজধানী রামপুরার বাসিন্দা রুমানা মহসীন দিনা।
শারমিনের বিয়ে উপলক্ষে তার বাসা ও ছাদ রঙিন বাতি দিয়ে সাজানো হয়। মেঝে-সিঁড়িতেও আল্পনা আঁকা হয়। পার্লার থেকে কনে সাজিয়ে আনা হয়। এমনকি আগের দিন বাড়ির ছাদে শারমিনের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানও হয়।
প্রায় ১২ বছর আগে দিনার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে শারমিন। এক সবজি বিক্রেতা তাকে দিনার বাসায় দিয়ে যান। দিনার দুই মেয়ে লাজিনা ও আমিরারও মন খারাপ। কিছুতেই তারা আপুকে হারাতে চায় না। তাদের চোখে জল। আবেগ আপ্লুত দিনা বলেন, তার দুটি নয়, তিনটি মেয়ে। তার দুই মেয়ে শারমিনকে আপু ডাকে। একইসঙ্গে তারা খাবার খাওয়া, টিভি দেখা ও আনন্দ সবই করত।
দিনা জানান, ১৮ বছর বয়স হওয়ার পর থেকেই শারমিনের জন্য ভালো পাত্রের সন্ধান করে আসছি। স্বর্ণালঙ্কারসহ বিয়ের যাবতীয় জিনিস কিনে শারমিনকে ভোলায় তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে বিয়ে না করে শারমিন ঢাকায় চলে আসে। সে জানায় ঢাকার মায়ের (দিনা) পছন্দেই সে বিয়ে করবে।
অবশেষে আমার পছন্দেই শারমিনের বিয়ে দিলাম। বর মোহাম্মদ মন্জুর রংপুরের ছেলে। তিনি বলেন, বড় মেয়ের বিয়ে দিলাম আমি। উন্নতমানের বিয়ের শাড়ি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সবই তিনি নিজ হাতে কিনেছেন। বিয়েতে ৪০ ইঞ্চি রঙিন টিভিসহ অনেক উপহার নিজ হাতে কিনেছেন দিনার স্বামী আজহারুল আকরাম। শারমিনকে বরের হাতে তুলে দিয়ে দিনা, তার স্বামী ও মেয়েরা কেঁদেছেন, অন্যদেরও কাঁদিয়েছেন। অতিথিরাও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
শারমিনকে বিদায় দিয়ে দিনা বলেন, ঢাকা থেকে অনেক দূরে যাচ্ছে আমার মেয়ে…। কথাগুলো বলেই তিনি কাঁদতে থাকেন। পাশে থাকা দিনার শাশুড়ি মাহমুদা খাতুন ও মা মালেকা বেগমের চোখেও জল। কারণ শারমিনকে তারাও নিজের নাতনির মতোই দেখেন।
দিনা বলেন, যখন ভাবি শারমিনের অনুপস্থিতি আমাদের কষ্ট দেয়। দুই মেয়ে বারবার তাদের আপুকে খুঁজছে। তিনি বলেন, গৃহকর্মীকে যেন কেউ অত্যাচার-নির্যাতন না করেন।
উৎস-ডেইলি বাংলাদেশ