দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ। 

প্রকাশিত: ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২২

                                    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ। 

দেশে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে রাস্তা পারাপারে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের লোক রাখারও নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান। এ বিষয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে বুধবার, ১২ জানুয়ারি, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় নিজের ভাষণে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ২০১০ থেকে ২০১২ সালে সারাদেশের জাতীয় মহাসড়কে ২০৯টি ব্ল্যাকস্পট বা দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আরো ২৫২টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে ১৭২টির বেলায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকি ব্ল্যাকস্পটগুলোও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি করা গেলে সড়ক ও মহাসড়কে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে দুর্ঘটনা।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় পথচারীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের দেশে একটা প্রবণতা হলো— দুর্ঘটনা ঘটলেই গাড়ির চালককে পিটানো হয়। অনেক সময় এতে মারা যান চালক। কিন্তু আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি না যে, কেন দুর্ঘটনা ঘটল, কার দোষে দুর্ঘটনা ঘটল। সেটা আগে খুঁজে বের করা দরকার। একই সঙ্গে আমাদের সবার ট্রাফিক রুল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার এবং সেটা মেনে চলা দরকার। মোবাইল ফোন কানে (হেডফোন) দিয়ে সড়ক পার কিংবা রেললাইনে চলা বন্ধ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, হঠাৎ করে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হবেন না। রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রেই কিন্তু অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় সব জায়গায় করা হচ্ছে ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস। যথাযথভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে আমি ছাত্র-ছাত্রীদের বলব যে, তারা যেন রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন মেনে চলে। একই সঙ্গে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাফিক রুল শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশ নিরাপদে রাস্তা পারাপারে সহায়তা করবে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষেরও উচিত তাদের নিজস্ব লোক রাখা। কারণ বাচ্চারা অনেক সময় অন্যদের কথা মানতে চায় না। স্কুল কর্তৃপক্ষের লোক হলে তারা ঠিকই কথা শুনবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রত্যেকটা স্কুলকে নির্দেশ দেবে, যাতে তারা তাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কার দোষ সেটা আগে দেখবেন। তারপর বিষয়টা দেখবেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেবেন। কিছু হলেই ড্রাইভারকে ধরে পেটাবেন, গাড়িতে আগুন দেবেন, এগুলো ঠিক না। আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টা দেখতে বলেন।

দেশবাসীকে করোনার বিধিনিষেধ মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক কর্মসূচি ছিল, সেগুলো আমরা ভার্চুয়ালি করছি। কারণ নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। সকলে স্বাস্থ্যবিধি ও অন্যান্য নিয়ম মেনে চলবেন। মাস্ক পরবেন। আমরা চাই, সবকিছু স্বাভাবিক চলুক। উন্নয়নের কাজগুলো চলতে থাকুক। তাহলে আমরা দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব। চলতি বছরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রকল্প আছে, যেগুলো আমরা উদ্বোধন করব। বিগত ১৩ বছরে আমরা দেশের মানুষের জন্য নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

এদিন উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলো হলো— ১। সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ মহাসড়ক, ২। বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগসড়ক ৩। রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু এবং ৪। ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাস।


Categories