
দাপুটে জয়ে মূলপর্বে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের সেরা বোলার সাকিব।
১৮১ রানের বিশাল সংগ্রহের পর ২৯ রানের মধ্যে পাপুয়া নিউগিনির সাত উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত পাপুয়া নিউগিনি অলআউট ৯৭ রানে।
রান পেয়েছেন ধুঁকতে থাকা লিটন দাস। শেষ দিকে ছোটখাটো ঝড় উঠল আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ব্যাটে। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বহুদিন পর বাংলাদেশ পেল প্রত্যাশিত পুঁজি। নির্ধারিত ওভারে সাত উইকেটে ১৮১ রান করে বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খায়। কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ নাঈম। এরপর রানের জন্য লিটনের সংগ্রাম শুরু। সাকিবকে নিয়ে গড়েন ৫০ রানের জুটি। জুটি গড়ার পথে দুজনের ব্যাটিং ধরন হলো দুরকম।
লিটন এগোলেন শম্বুক গতিতে। সাকিব থাকলেন আগ্রাসী। ২৩ বলে ২৯ রানে আউট হন লিটন। দলীয় শতক হতেই সাজঘরে ফিরলেন সাকিবও। ৩৭ বলে তিন ছয়ে ৪৬ রানে বিদায় নেন তিনি। কিছুটা চাপে পড়ে টাইগাররা। ওভার প্রতি রান সাতের মতো। এরপরই শুরু হলো আসল ঝড়।
জ্বলে উঠলেন মাহমুদউল্লাহ। ব্যাট হাতে কচুকাটা করলেন পিএনজি বোলারদের। ২৮ বলে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৫০ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তাকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়েছেন আফিফ ও সাইফুদ্দিন। অফিফ ১৪ বলে ২১ রানে আউট হন। ছয় বলে ১৯ রানে অজেয় থাকেন সাইফ।
শেষ পাঁচ ওভারে ৬৮ রান তোলে বাংলাদেশ। টাইগারদের পতন হওয়া সাত উইকেটের দুটি করে নিয়েছেন পিএনজি বোলার কাবুয়া মরেয়া, ড্যামিয়েন রাভু ও অধিনায়ক আসাদ ভালা। একটি শিকার সিমন আতাইর।
প্রথমজন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান এবং দ্বিতীয়জন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো। এমনিতেই অনেক পিছিয়ে ক্যারিবীয় তারকা। তার ওপর তিনি মাঠে নামার আগেই আফ্রিদির রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বাছাইপর্বে তিন ম্যাচে সাকিব নিলেন নয় উইকেট। আফ্রিদির সমান ৩৯টি উইকেট এখন সাকিবেরও।
অপেক্ষা এখন পাকিস্তানি কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে সুপার টুয়েলভেই আফ্রিদিকে ছাড়িয়ে যাবেন সাকিব।
এবারের আসর শুরুর আগে সর্বোচ্চ শিকারিদের তালিকায় সাকিব ছিলেন সাত নম্বরে। বাছাইপর্বে তিন ম্যাচ খেলে সাকিব একে একে ছাড়িয়ে গেলেন স্টুয়ার্ট ব্রড (৩০) ডেল স্টেইন (৩০), উমর গুল (৩৫), অজান্তা মেন্ডিস (৩৫), সাঈদ আজমল (৩৬) ও লাসিথ মালিঙ্গাকে (৩৮)। এক হিসেবে আফ্রিদিকেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই উইকেট নেন সাকিব। পরের ম্যাচে ওমানের তিন ব্যাটারকে শিকারে পরিণত করেন তিনি। আজ মাস্কাটে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে তো অগ্নিমূর্তি ধারণ করলেন। চার ওভারে নয় রানের বিনিময়ে চার উইকেট নিয়েছেন সাকিব। বিশ্বকাপে এটাই তার সেরা বোলিং।
শুধু বল হাতেই নয়, পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ব্যাট হাতেও আলো ছড়িয়েছেন সাকিব। ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহে রেখেছেন অবদান। বাংলাদেশ জিতেছে ৮৪ রানের বিরাট ব্যবধানে। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাকিব।