তাহিরপুরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পর্যটকের ভিড়।

প্রকাশিত: ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২১
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

তাহিরপুরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পর্যটকের ভিড়।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১১ জুন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঈদের ছুটিতে পর্যটকেরা ভিড় করছেন উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করতে কঠোর নজরদারি রয়েছে তাদের।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২২, ২৩ জুলাই) সরেজমিনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে স্বজনদের নিয়ে এসেছেন হাজারো মানুষ। তাদের অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাযায়,২২জুলাই র‍্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় ৯ জনের মধ্যে একজন গর্ভবতী, একজন প্রতিবন্ধী যুবকসহ ৭ জন করোনা পজিটিভ এসেছে। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়া আতংক বিরাজ করছে সর্ব মহলে।
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, করোনা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় মোট ৭৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৫ জনের। আর করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৩জন। বাকিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও নিজ নিজ বাড়িতে আইসলোশনে রয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ১১ জুন থেকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সকল পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর পরপরই সরকারিভাবে জারি করা হয় কঠোর বিধিনিষেধ। কিন্তু গত ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ঈদুল আজহা উদযাপনে সারাদেশ বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। এই সুযোগে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদীসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আসেন মানুষ। যদিও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে এবং জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদীসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে যাচ্ছে এবং ট্যাকেরঘাট গিয়ে রাত্রি যাপন করছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
পর্যটক শাকিল মিয়া বলেন, ঈদে আনন্দ উপভোগ করতে সবাই মিলে নৌকাযোগে হাওরে এসেছি। একদিনে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
আরেক পর্যটক শফিক মিয়া বলেন, সবাই যার যার মত করে ঈদের আনন্দে এসেছে তাই আমরাও এসেছি। আমরা করোনার স্বাস্থ্য বিধি মেনেই এসেছি।
তাহিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ আবু আহম্মদ শাফী জানান, সবাইকে সর্তকতা অবলম্বন করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে না হলে আমাদের সামনে আরও বড় বিপদ রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রায়হান কবির বলেন, প্রথমে পর্যটকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। পর্যটকরা যাতে হাওরে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে। এরপরও যদি কেউ বিধিনিষেধ অমান্য করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে আসা বেশকিছু পর্যটক বহনকারী নৌকাসহ বিভিন্ন যানবাহন ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্দেশনা অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। পর্যটক বহন না করার জন্য সকল নৌযান চালকদের ও নৌ-ঘাটের দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

Categories