খুলনা মহানগরী হতে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ০৩ জন গ্রেফতার ।

মোঃ মিজানুর রহমান খুলনা প্রতিনিধি।
খুলনা মহানগরী হতে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ০৩ জন গ্রেফতার ।
র্যাব ফোর্সেস আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করতে এবং সন্মানিত নাগরিকদের জন্য টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের আলোকে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত ও পতারক চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র কখনো ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কখনো কাষ্টমসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কখনো উর্দ্ধতন সরকারী কর্মকর্তা, অথবা কখনো সেনা বাহিনীর কর্মকর্তার পরিচয়ে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে অথবা বড় অংকের ব্যাংক ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে শাখা প্রশাখা বিস্তারের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই প্রতারক চক্রের অভিনব কর্ম কৌশলের মাধ্যমে তাদের নারী সহকর্মীদের কাজে লাগিয়ে এবং দামি গাড়ি ভাড়া করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাইট ভিজিটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কোটি টাকার ব্যাংক লোন করিয়ে দেওয়ার দরবার করে থাকেন এবং সুকৌশলে প্রতারণার ফাঁদ এঁটে থাকেন।
এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) দেশের দক্ষিনাঞ্চল খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী সহ ফরিদপুর, ঢাকা, চাঁদপুর, গাজিপুর, বগুড়া, নরসিংদী ও অন্যান্য অঞ্চলের প্রায় ২১ জন ভুক্তভোগীর আহাজারিকে আমলে নিয়ে অভিযান শুরু করে এবং জানতে পারে এই প্রতারক চক্র প্রতারণার মাধ্যমে এই ভুক্তভোগীদের নিকট হতে আনুমানিক ৭২ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়৷
ভুক্তভোগীদের সাথে কথোপকথনে আরো জানা যায় এই চক্রের সদস্যরা তাদের বিভিন্ন ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, কাষ্টমস কর্মকর্তা সহ উর্ধ্বতন সরকারী ক্যাডারের পরিচয় দেয় এবং চক্রের সদস্যদের সহায়তায় ব্যাংক এবং সরকারী অফিসে বসেই ৫০ লক্ষ থেকে ২ শত কোটি টাকা অংকের লোন করিয়ে দেওয়া সহ চাকুরি প্রদানের কথা বলে বিশ্বাস অর্জন করে এবং প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়৷ র্যাব-৬, খুলনা (সদর কোম্পানি) এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে ছায়া তদন্ত ও অভিযান অব্যহত রাখে৷
প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের অংশ হিসেবে ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ র্যাব-৬ এর আভিযানিক দলটি প্রতারক চক্রের সদস্যদের অবস্থান নিশ্চিতের পর কেএমপি খুলনার লবনচরা থানাধীন পিঁপড়ামারি রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা ১। মোঃ রবিউল ইসলাম হৃদয় (৩২) পিতা- এসএম শহিদুল ইসলাম, মাতা- রহিমা খাতুন, স্ত্রী- আসমা খাতুন, সাং- বেতকাশি, থানা- কয়রা, জেলা- খুলনা সহ তার সহযোগী ২। মোঃ মামুন মাহমুদ (৪২) পিতা- মৃত মোঃ শাহবুদ্দিন সরকার, মাতা- নুরজাহান বেগম, স্ত্রী- সুলতানা আক্তার পুস্প, গ্রাম- আশুতিয়াপাড়া, থানা- করিমগঞ্জ, জেলা- কিশোরগঞ্জ এবং ৩। সুলতানা আক্তার (৩৭), পিতা- মৃত ফারুক @ চুন্নু শিকদার, মাতা-সাবিহা বেগম, স্বামী-মোঃ মামুন মাহমুদ, গ্রাম- আশুতিয়াপাড়া, থানা- করিমগঞ্জ, জেলা- কিশোরগঞ্জদেরকে গ্রেফতার করে৷ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোঃ রবিউল ইসলাম হৃদয় প্রতারণার অভিনব কর্মকৌশল ও ফাঁদের কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করে ৷
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে কেএমপি, খুলনার হরিণটানা থানায় ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে র্যাব-৬ এর সহযোগীতায় মামলা দায়ের করে এবং মামলা মূলে গ্রেফতারকৃতদের উক্ত থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।