
আবদুল মান্নান,কক্সবাজার
ওসি প্রদীপ সহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা।
টেকনাফের বহিস্কৃত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় পুলিশ সহ মোট ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১০ লাখ টাকা দাবি করে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আরো পাঁচ লাখ টাকা না দেয়ায় টেকনাফের মাহমুদুর রহমান নামের এক প্রবাসীকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগ মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ (২৬ আগস্ট) বুধবার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ (টেকনাফ) এজাহারটি দায়ের করা হয়। বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন শুনানী শেষে এজাহারটি মামলা হিসাবে রুজু না করে ওই ঘটনায় অন্য কোনো হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে কিনা তা জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
নিহত মাহমুদুর রহমানের ভাই নুরুল হোসাইন বাদি হয়ে এই এজাহার দায়ের করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি ইনসাফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০১৯ সালের ২৮মার্চ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীপাড়া নূরুল হোসেনের পুত্র প্রবাসী মাহমুদুর রহমানকে থানার এসআই দীপকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।
এসআই দীপক ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ক্রসফায়ার না দেয়ার শর্তে প্রবাসীর পরিবারের থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। পরিবার নিরুপায় হয়ে পাঁচ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু আরো পাঁচ লাখ টাকা পুলিশের দাবি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় গত ৩১ মার্চ রাতে বন্দুকযুদ্ধের নামে প্রবাসী মাহমুদুর রহমানকে হত্যা করে।
মামলার এজাহারে এসআই দীপক কে প্রধান ও বহিস্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৬ জন পুলিশ সদস্য। বাকিরা স্থানীয় মোট ২৩ জনকে আসামী করা হয়। অন্যান্য আসামিরা হলেন-এসআই জামশেদ আহমেদ, ওসি তদন্ত এবিএম সামশুদ্দোহা, এসআই দীপংকর কর্মকার, এএসআই হিল্লোল বড়ুয়া, এএসআই ফরহাদ হোসেন, এএসআই আমির হোসেন, এএসআই সন্জিত দত্ত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, সাগর দেব, কনস্টেবল হৃদয়,ড্রাইভার জহির, এপিবিএন কনস্টেবল সৈকত, কনস্টেবল প্রসেনজিৎ, কনস্টেবল উদয়।
স্থানীয় আসামিরা হল-হ্নীলা সিকদার পাড়র নূরুল আমিন প্রকাশ নূরুল্লাহ দফাদার, জাহাঙ্গীর আলম,নাটমুরা পাড়ার নূরুল হোসেন, সিকদার পাড়ার ভূট্টু, আনোয়ারুল ইসলাম, নূরুল আলম ও নূরুল আমিন।
মামলার শুনানি শেষে এ বিষয়ে অন্য কোন হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে কিনা আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিলের টেকনাফ থানার ওসি কে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
উল্লেখ্য, বর্তমান টেকনাফ থানার ওসির দায়িত্ব পালন করছেন মামলার অন্যতম আসামি ওসি (তদন্ত) এবিএম সামশুদ্দোহা।
বাদী নুরুল হোছাইন জানান, ‘আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন সময় কোন মামলা ছিল না। পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে আমার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। জীবনের নিরাপত্তার কারণে এতদিন মামলা করার সুযোগ ছিল না। এখন সুযোগ হয়েছে তাই মামলা করেছি।’