আওয়ামীলীগের সাংসদ মোস্তাফিজের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের দাবি

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২০

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।। 

সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলাকারী চট্টগ্রাম-১৬ সংসদীয় আসনের মোস্তাফিজুর রহমানের সংসদ সদস্য পদ বাতিলসহ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার দাবিতে গতকাল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নগর ও জেলা কমিটির পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম নগর ইউনিট কমাণ্ডার মোজাফফর আহমদ।
স্মারকলিপিটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমাণ্ডার মো. আব্দুর রাজ্জাক, নগর সহকারী কমান্ডার মো. খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), সাতকানিয়ার কমাণ্ডার আবু তাহের এলএনজি, চন্দনাইশ কমাণ্ডার জাফর আলী হিরু, মুক্তিযোদ্ধা রতন কুমার নাথ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ডের উপদেষ্টা মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী, নগর কমিটির আহ্বায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান সিদ্দিকী পাভেল, যুগ্ম আহবায়ক তানজীর কাদেরী, সদস্য আরফাতুল মান্নান ঝিনুক, ফয়সাল জামিল সাকি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম প্রতিবাদকারী মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম শহর গেরিলা বাহিনীর উপ-প্রধান মৌলভী সৈয়দ আহমদের বড়ভাই বাঁশখালী আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফ গত ২৬ জুলাই ইন্তেকাল করেন। এরপর প্রশাসনকে অবহিত করে পরদিন ২৭ জুলাই সকাল ১১টায় জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ে গার্ড অব অনার প্রদান করতে পুলিশ উপস্থিত হলেও উপজেলা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা উপস্থিত হননি। ফলে রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়াই এই মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন করতে হয়।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী একজন সাংবাদিকের সাথে ফোনে বলেন, বাঁশখালীতে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, বাঁশখালীতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই ।
একজন এমপির এমন মন্তব্যে মুক্তিযোদ্ধারা হতবাক। এই এমপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সম্পর্কেও কটুক্তি করেছিলেন।
এতে আরো বলা হয়, সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালের ১জুন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল কবিরকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। ৪জুন এমপিকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা করেন নির্বাচন কর্মকর্তা।
২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভায় তার বিরুদ্ধে জামায়াত প্রীতির অভিযোগ তোলেন জেলা আইনজীবি সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও আওয়ামী লীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক। এসময় মুজিবুল হকের দিকে জুতা নিয়ে তেড়ে যান এমপি মোস্তাফিজ।
মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফকে “গার্ড অব অনার” প্রদান না করা, এমপি মোস্তাফিজুর রহমান কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে গত ২৪ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত্বরে সন্তান কমান্ডের মানববন্ধন হয়। এসময় এমপির নেতৃত্বে বাঁশখালী থেকে ট্রাক যোগে সন্ত্রাসী বাহিনী এসে অতর্কিত হামলা চালায়। একই সাথে সমাবেশের মাইক কেড়ে নিয়ে ভাংচুর ও তান্ডব চালায় সন্ত্রাসীরা।

 


Categories